সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ ক্ষমতার মেয়াদ আরও ৬০ দিন বাড়লো
সরকার বদলের পর দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিশেষ ক্ষমতা আরও দুই মাস বাড়ানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী প্রথম দুই মাসের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অন্তর্বর্তী সরকার শুক্রবার নতুন আদেশ জারি করে। শনিবার এ প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
নতুন প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, সশস্ত্র বাহিনীর ক্যাপ্টেন বা তার ওপরে কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা, পাশাপাশি কোস্টগার্ড ও বিজিবিতে প্রেষণে থাকা সমপর্যায়ের কর্মকর্তারা এই ক্ষমতা ভোগ করবেন। এই বিশেষ ক্ষমতার আওতায় গ্রেপ্তার করা, বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করা, তল্লাশি পরিচালনা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ থাকবে।
পটভূমি হিসেবে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে থেকেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে সেনাবাহিনী মোতায়েন ছিল। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কারফিউ তুলে নিলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাসদস্যদের মাঠ পর্যায়ে রাখা হয়।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো দুই মাসের জন্য সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ৩০ সেপ্টেম্বর সংশোধিত আদেশে সশস্ত্র বাহিনীর অন্যান্য শাখা, নৌ ও বিমানবাহিনী, অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বর্তমানে দেশের ৬২ জেলায় সেনাসদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করছে।
মিলিটারি অপারেশনস ডিরেক্টরেটের স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দারের মতে, গত দুই মাসে সেনাবাহিনী প্রায় আড়াই হাজার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে এবং ছয় হাজারের বেশি অস্ত্র ও দুই লাখ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। তিনি আরও জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি সংস্থা, এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সংশ্লিষ্ট ৭০০-এর বেশি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সেনাবাহিনী সফলভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর পুলিশ কর্মবিরতিতে গেলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যায়। এরই মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সেনাসদস্যরা মাঠে থেকে পুলিশকে সহায়তা করছে। পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়ায় সামরিক কর্মকর্তাদের বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতার মেয়াদ আরও ৬০ দিন বাড়ানো হয়েছে।