আমদানির সাড়ে তিনগুণ দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে আলু!
বাজারে সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও আলুর দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। বর্তমানে ভারত থেকে ২১ টাকা ৬০ পয়সা কেজি দরে আমদানি করা হলেও, সেই আলু খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি দরে। একইসঙ্গে, কৃষকদের নতুন আলু বাজারে আসা শুরু করলেও দাম কমার কোনো লক্ষণ নেই। বাজারে সিন্ডিকেট ও কমিশন বাণিজ্যের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
### সিন্ডিকেটের ভূমিকা:
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আমদানিকারক ও শ্যামবাজারের আড়তদাররা এই সিন্ডিকেটের মূল অংশ। তারা আলুর আমদানি দামের ওপর সিন্ডিকেট করে দুই ধাপে এর মূল্য বৃদ্ধি করছে। আমদানিকারকদের ২১ টাকা ৬০ পয়সা দামের আলু আড়তদারদের মাধ্যমে ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। এরপর খুচরা বাজারে সেই আলু ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
### কোল্ড স্টোরেজে আলুর মূল্যবৃদ্ধি:
কোল্ড স্টোরেজ মালিকরাও আলুর মূল্য বাড়ানোর আরেকটি চক্র তৈরি করেছেন। পুরাতন আলু, যা একসময় কেজি প্রতি ৩৫-৪০ টাকায় পাওয়া যেত, এখন ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজার হয়ে এই আলু খুচরা পর্যায়ে পৌঁছতে পৌঁছতে ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক মাস আগেও ৫৫-৬০ টাকার মধ্যে ছিল।
### ক্রেতাদের অভিযোগ:
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা মো. রবিউল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "শীতের আগে প্রতি বছর আলুর দাম ২৫ টাকার নিচে চলে আসে। এখন এক কেজি আলু ৭৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এটা একটা অরাজক পরিস্থিতি। কেউ কি এই সমস্যার সমাধান করবে না?"
### বিশেষজ্ঞের মতামত:
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাবেক সভাপতি গোলাম রহমান জানান, বাজারে সিন্ডিকেট ভাঙার সক্ষমতা কোনো সরকারেরই ছিল না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছেও মানুষের প্রত্যাশা ছিল যে তারা সিন্ডিকেট দমন করবে। তবে সেটা কার্যকর হয়নি। তিনি আরও বলেন, সরকারের কাছে পণ্যের দাম বাড়ানো এবং সিন্ডিকেট সম্পর্কে সব তথ্য আছে। কার্যকর ব্যবস্থা নিলে দাম কমানো সম্ভব। কিন্তু গাফিলতির কারণে ভোক্তাদের এই "গলাকাটা" দামের বোঝা বয়ে চলতে হচ্ছে।
এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া ভোক্তাদের দুর্ভোগ লাঘব সম্ভব নয়। সরকারের উচিত সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং বাজার তদারকিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।