পাকিস্তান থেকে সেই জাহাজে যা যা এলো জানলে অবাক হবেন

 


পাকিস্তানের করাচি বন্দরের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের সরাসরি কনটেইনার জাহাজ যোগাযোগ চালু হয়েছে গত সপ্তাহে। নতুন এই পরিবহনসেবার আওতায় প্রথমবার করাচি থেকে সরাসরি চট্টগ্রামে কনটেইনারে পণ্য আনা হয়েছে। এর আগে পাকিস্তানের কনটেইনার পণ্য তৃতীয় দেশের মাধ্যমে চট্টগ্রামে পৌঁছানো হতো। 


প্রথমবারের এই সেবায় ‘এমভি ইউয়ান জিয়ান ফা ঝং’ জাহাজে কী পণ্য আনা হয়েছে, তা নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা।


### পাকিস্তান থেকে আমদানি

চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, জাহাজটি মঙ্গলবার বন্দরে ৩৭০টি কনটেইনার নামিয়েছে। এর মধ্যে ২৯৭টি কনটেইনার এসেছে করাচি থেকে, আর ৭৩টি সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। শিপিং ও কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, পাকিস্তান থেকে আসা কনটেইনারে ছিল ৬,৩৩৭ টন শিল্পের কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্য। এসব পণ্য সরবরাহ করেছে পাকিস্তানের ১৮টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। 


সবচেয়ে বেশি আনা হয়েছে সোডিয়াম কার্বনেট (সোডা অ্যাশ), যা টেক্সটাইলসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহৃত হয়। ১১৫টি কনটেইনারে সোডা অ্যাশ ছিল। ডলোমাইট ছিল ৪৬টি কনটেইনারে, চুনাপাথর ৩৫টি, এবং ম্যাগনেশিয়াম কার্বোনেট ছয়টি কনটেইনারে। 


কাচশিল্পের জন্য ভাঙা কাচ এসেছে ১০টি কনটেইনারে। পোশাকশিল্পের জন্য কাপড় ও রংসহ প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ছিল ২৮টি কনটেইনারে। একটি কনটেইনারে গাড়ির যন্ত্রাংশও ছিল। এই পণ্যগুলো আমদানি করেছে আকিজ গ্লাস, নাসির ফ্লোট গ্লাস, প্যাসিফিক জিনস, এক্স সিরামিকস, এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসসহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠান। 


পেঁয়াজ এসেছে ৪২টি কনটেইনারে, যার মোট ওজন ৬১১ টন। পাশাপাশি ১৪টি কনটেইনারে আমদানি করা আলুর পরিমাণ ছিল ২০৩ টন। হিমায়িত কনটেইনারে সংরক্ষিত এই পণ্যগুলো এনেছে ঢাকার হাফিজ করপোরেশন, এম আর ট্রেডিংস, এবং চট্টগ্রামের আল্লাহর রহমত স্টোর। 


### সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে পণ্য

পাকিস্তানের পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকেও বিভিন্ন পণ্য এসেছে। এর মধ্যে রয়েছে খেজুর, জিপসাম, পুরোনো লোহার টুকরা, মার্বেল ব্লক, কপার ওয়্যার, এবং রেজিন। একটি কনটেইনারে হুইস্কি, ভদকা ও ওয়াইন আমদানি করেছে ঢাকার ডিপ্লোমেটিক ওয়্যারহাউস সাবির ট্রেডার্স।


### সেবা চালুর গুরুত্ব

করাচি থেকে সরাসরি সেবা চালুর আগে কনটেইনারগুলো শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া বা সিঙ্গাপুরের বন্দরে নামিয়ে চট্টগ্রামের ফিডার জাহাজে তোলা হতো। এখন এই সেবা সরাসরি করাচি থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত জাহাজ চলাচল নিশ্চিত করছে, যা সময় ও খরচ উভয়ই কমাবে। 


### ভ্রমণপথ

দুবাইভিত্তিক শিপিং সংস্থা ‘ফিডার লাইনস ডিএমসিসি’ এই সেবাটি চালু করেছে। তাদের জাহাজ সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে পাকিস্তানের করাচি হয়ে ভারতের মুন্দ্রা, ইন্দোনেশিয়ার বেলাওয়ান ও মালয়েশিয়ার পোর্ট কেলাং হয়ে চট্টগ্রামে পৌঁছায়। সমুদ্রপথে করাচি থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব প্রায় ২,৬১২ নটিক্যাল মাইল। 


চট্টগ্রাম বন্দরের সেক্রেটারি ওমর ফারুক জানান, পণ্য খালাসের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমদানিকারকরা কাস্টমস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে পণ্য তুলে নেবেন। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url