যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সহায়তা কমিয়ে দিলে আমরা হেরে যাব : জেলেনস্কি

 

রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ চলছে টানা আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া এই সংঘাতে ইউক্রেনকে সহায়তা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের একাধিক দেশ। অস্ত্র সরবরাহ থেকে শুরু করে বিশাল অঙ্কের সামরিক তহবিল প্রদানেও সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেনের প্রতি এই সহায়তা কমে যেতে পারে।  


এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধে পরাজয়ের শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সহায়তা কমায়, “আমরা হেরে যাব।” বুধবার (২০ নভেম্বর) বার্তাসংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।  


### জেলেনস্কির উদ্বেগ

ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, “যদি যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা কমিয়ে দেয়, তাহলে আমরা—আমি মনে করি, আমরা হারব। আমরা লড়াই চালিয়ে যাব, আমাদের নিজস্ব সামরিক উৎপাদন আছে। তবে তা জয় নিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট নয়।” তিনি আরও বলেন, এই লড়াইয়ে টিকে থাকতে গেলে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  


### ট্রাম্পের অবস্থান

ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে দেওয়া অর্থ ও সামরিক সহায়তার একজন কট্টর সমালোচক। নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি যুদ্ধ দ্রুত শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও কীভাবে তা করবেন, সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা জানাননি। এদিকে, ইউক্রেনের জন্য দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সিদ্ধান্তে ট্রাম্পের মিত্ররা সমালোচনা করেছেন, যা যুদ্ধকে আরও উত্তপ্ত করার আশঙ্কা তৈরি করেছে।  


### যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন ঐক্যের গুরুত্ব

জেলেনস্কি তার সাক্ষাৎকারে বলেন, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে “ঐক্য” এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বিশ্বাস করেন, ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে প্রভাবিত করতে পারেন এবং যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারেন। জেলেনস্কি বলেন, “ট্রাম্প পুতিনের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী এবং এটি যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করছে, কারণ পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় দুর্বল।”  


### যুদ্ধের বর্তমান অবস্থা

রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সর্বাত্মক হামলা চালায়। এখন পর্যন্ত এ সংঘাতে প্রায় ১২ হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। রুশ বাহিনী দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া প্রদেশের আংশিক দখল নিয়ে ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের এক-পঞ্চমাংশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে রাশিয়ান বাহিনী পূর্বাঞ্চলের রণাঙ্গনেও অগ্রগতি অর্জন করেছে।  


যুদ্ধের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হলেও, যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা এতে নির্ণায়ক হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url